• Home  / 
  • জাতীয়  / 

ইঞ্জেকশন ও পরে বালিশ চাপায় খুন করা হয় সালমান শাহকে: নীলা চৌধুরী

Spread the love

আয়না২৪ প্রতিবেদন

চিত্রনায়ক সালমান শাহকে ইঞ্জেকশনে জেসোকিন প্রয়োগ করে, পরে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করা হয়েছিল।   আজ মঙ্গলবার লন্ডন সময়, বিকাল সাড়ে তিনটায় সালমান শাহ ‘হত্যাকারীদের’ বিচারও গ্রেপ্তারের দাবিতে লন্ডনে সংবাদ সম্মেলন এই দাবি  করলেন তাঁর মা নীলা চৌধুরী।

এ সময় বারবার আবেগে আপ্লুত হচ্ছিলেন, কখনো রাগে -ক্ষোভে অকাল প্রয়াত ছেলে চিত্রনায়ক সালমান শাহ, তার আদরের ইমনের মৃত্যু নিয়ে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ জানিয়েছেন উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী রুবীর ভিডিও বার্তায় সালমান শাহ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তোলপাড় জাগানো বক্তব্য প্রকাশ পরবর্তী এ সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হন নীলা চৌধুরী।   এসময় তার সঙ্গে ছিলেন সালমান শাহর দুই মামা বুলবুল চৌধুরী ও বজলু চৌধুরী এবং মামাতো দুই ভাই।

সংবাদ সম্মেলনে নীলা চৌধুরী দেশবাসী, প্রশাসন ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সালমান শাহ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। নীলা চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ ২২টি বছর আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন হয়তো আমার ছেলের হত্যার বিচার দেখে যাওয়ার জন্যই। মৃত ছেলের গলার চেইনটি নিজের গলায় দেখিয়ে বলেন, আমি এই চেইনটি এখনো গলায় বয়ে বেড়াচ্ছি ছেলের বিচারের আশায়।

তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে প্রশ্ন করেন, কাজের মেয়ে ডলি কীভাবে লাশ নামালো, এইটা কতোটা বাস্তব সম্মত? একটা মেয়ে কীভাবে একটা ছেলের লাশ নামাতে সক্ষম হয়? সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সংবাদকর্মী ও অন্যান্যদের তিনি বলেন, আপনারা আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন আমি যেন ছেলের হত্যাকাণ্ডের বিচার দেখে যেতে পারি। তিনি আরও বলেন, হত্যাকারী নিজে যখন সাক্ষী দিচ্ছে, তখন আর এই মামলাকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে পুলিশের তদন্ত করতে বাধা কোথায়! দীর্ঘ ২২টি বছর আমি আদালতের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছি।

আমি শুরু থেকেই বলছি, আমার ছেলে আত্মহত্যা করে নাই, তাকে খুন করা হয়েছে। আমার ছেলের সহকারী আবুল, কাজের মেয়ে ডলি এরা কোথায়? আমার ছেলের হত্যাকাণ্ডকে প্রভাবিত করতে আমার চরিত্র নিয়ে অপবাদ দেয়া হয়েছে। আমি দুঃশ্চরিত্র নই। আমি রাজনীতি করি,  এরশাদের সাথে রাজনীতি করা যদি অপরাধ হয়, শেখ হাসিনার সাথে রাজনীতিও তো তাহলে অপরাধ। এসময় মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা আবুল আব্দুল্লাহার অপসারণ দাবি করেন তিনি।   নীলা চৌধুরী  বলেন, রুবীর এই বক্তব্য সত্য নাকি আব্দুল্লাহার প্রতিবেদন সত্য? আমার একজন স্বাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয় নাই।

সাংবাদিকদের করা বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়া পুলিশের দেয়া প্রতিবেদনকে সত্য ধরে নিচ্ছেন কেন? তিনি বলেন, আমি শুরু থেকেই বলেছি এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আসামিকে এতোদিন আপনারা খুঁজছিলেন, এখন আসামি যখন নিজে এসে ধরা দিয়েছে  তখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। রুবী যাদের নাম বলেছে তাদের আইনি প্রক্রিয়ায় সম্মানের সাথেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।

আমার এখন একটাই দাবি, সালমান শাহর মামলাটি হত্যা মামলা হিসাবে তদন্ত শুরু হোক তাহলেই প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে।

উল্লেখ্য, পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহের ১১/বি নিউস্কাটন রোডের স্কাটন প্লাজার নিজ কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নায়ক সালমান শাহকে। পরে তাকে প্রথমে হলি ফ্যামেলি এবং তারপরে ঢাকা মেডিক্যালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এরপরে সালমান শাহ হত্যা মামলায় তার বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সালমান শাহের স্ত্রী সামিরা হক, আবুল হোসেন খান, বাসার কাজের মেয়ে ডলি, মনেয়ারা বেগম, সিকিউরিটি গার্ড আব্দুল খালেক, সামিরার আত্মীয় রুবি, এফডিসির সহকারী নিত্য পরিচালক নজরুল শেখ ও ইয়াসমিন হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে উল্লেখ করেন। পরে ঘটনাচক্রে মামলার আসামি হিসেবে আরও যোগ হয় খল নায়ক ডন, ডেভিড, ফারুক, আজিজ মোহাম্মাদ ভাই, সাত্তার, সাজু, সামিরার মা লতিফা হক লুসিকে।