মামুন-অর-রশিদ, অতিথি প্রতিবেদক
বাংলার বুক চিড়ে মনোরম প্রকৃতির লীলাভুমি অপরূপ সৌন্দর্যের অরণ্য দ্বীপ ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচার ‘কুকরি-মুকরি’ । কয়েকটি গ্রাম মিলে এটি একটি ইউনিয়ন। এখানে দৃষ্টি সীমানার পুরোটা জুড়ে শুধু সবুজ আর সবুজ। দৃষ্টিকে সম্মোহন করে হাতছানি দিতে থাকে টুকরো টুকরো নিবিড় বনভূমি। মেঘনার উত্তাল ঢেউ, বৈরী বাতাস আর জলোচ্ছ্বাসের গর্জন, সবুজ দ্বীপ আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাভূমিতে পাওয়া যায় এক অনন্য মানসিক প্রশান্তি। বন্যপ্রাণীদের অভয়ারণ্য এই দ্বীপে ৷ শিয়ালের দল, হরিণের পাল, আর বন্য মহিষের দলবেধে বিচরণ দেখা যায় অনায়াসেই। নাম না জানা হাজার রকমের গাছের সাথে সারি সারি নারিকেল গাছ আর বিশাল বালুকাময় চরটি দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। শীতকালে দেখা মিলে হাজার হাজার অতিথি পাখির ৷ তৈরি করা হয়েছে ঝুলন্ত ব্রীজ ও মাকড়সার জাল। তবে শীত কালই ভ্রমণের ভাল সময়। বিশেষ করে জানুয়ারি থেকে মার্চ।
এই চরের কাছাকাছি ঢাল চর, চর মানিক, সোনার চর, রুপার চর সহ বেশ কিছু চর আছে। কুকরি মুকরি থেকে রিসার্ভ ট্রলার কিংবা স্পিডবোর্ড নিয়ে ঘুরে যাওয়া যায় এসব চরে ৷ আরেকটু দুরে গেলে তাড়ুয়া দ্বীপ। সেখানে বঙ্গোপসাগরের পারে বিশাল বিচ।
চর কুকরি মুকরিতে থাকার জন্য রয়েছে বন বিভাগের একটি বিশাল রেস্ট হাউজ। চারিদিকে ফুলের বাগানে ঘেরা ও নিচেই রয়েছে একটি সুইমিংপুল। চমৎকার ও আধুনিক ডিজাইনে করা এই রেস্ট হাউজে রয়েছে জেনারেটর ও আইপিএস ব্যবস্থা। যদিও এটি এখন দেখভাল করা হয় ইউপি চেয়ারম্যানের তত্বাবধানে।
তাছাড়া ব্যক্তি মালিকানায় দুএকটি আবাসিক হোটেল বা রিসোর্ট আছে। থাকার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে ওঠা যায়। তবে সবচেয়ে সহজ আর মজাদার থাকার ব্যবস্থা হলো চরে ক্যাম্প করে থাকা। এতে খরচ যেমন বাঁচবে, সাথে প্রাকৃতিক এক অন্যরকম ভিন্ন পরিবেশের স্বাদ পাওয়া যায়। এই চরের যেখানে খুশি ক্যাম্প করা যাবে, সম্পূর্ণ নিরাপদ। ক্যাম্প করার জন্য এখানে আছে, বিশাল জায়গা। তবে বনের ভিতরে ক্যাম্প করা থেকে বিরত থাকতে হবে। চমৎকার এই জায়গাটিতে এখনো বিদ্যুৎ পৌছেনি। তবে প্রক্রিয়াধীন আছে। ফলে মোবাইল চার্জ নিয়ে কিছু বিরম্বনা হতে পারে। তাই যাওয়ার সময় ফুল চার্জ ও পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে যাওয়াই ভালো।