
বিশেষ প্রতিবেদক
এবার কঠিন ও তরল মানববর্জ্যকে রূপান্তর করে পুনরায় খাদ্যে পরিণত করার পদ্ধতি উদ্ভাবনের চেষ্টা করে সফলতার দাবি করেছেন আমেরিকার পেনসিলভেনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক।
তাঁরা বলেছেন, তরল ও কঠিন মানববর্জ্য মাইক্রোবিয়াল রিঅ্যাক্টরের সাহায্যে পুনরায় খাদ্যে পরিণত করা সম্ভব। যা ভবিষ্যতে মহাকাশযাত্রায় নভোচারীদের আহারে কাজে লাগতে পারে।
সম্প্রতি ‘লাইফ সায়েন্স ইন স্পেস রিসার্চ’ একটি সাময়িকীতে এ সম্পর্কিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এর দায়িত্বে ছিলেন আমেরকিার পেনসিলভেনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির ওই গবেষকেরা। নভোচারীদের মিশনে পাঠানো হলে তাঁরা নিজেদের মল-মূত্র ব্যবহার করে খাদ্য উৎপাদন করতে পারেন কি না-এ নিয়ে গবেষণা করছিলেন ওই গবেষকেরা।
পেনসিলভেনিয়া ইউনিভার্সিটির জিওসায়েন্স বিষয়ের অধ্যাপক ও গবেষক দলের প্রধান ক্রিস্টোফার হাউজ বললেন, ‘আমরা এমন এক অকল্পনীয় ধারণার ওপর এমন একটি কাজ করছিলাম যাতে মহাকাশচারীরা তাঁদের নিজেদের বর্জ্যকে জীবাণুর মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত করে এমন জৈব পদার্থ উৎপাদন করতে পারেন যা সরাসরি খাওয়ার যোগ্য। কিংবা তা থেকে খাদ্য উৎপাদন করা যাবে।’
প্রসঙ্গত, ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের (আএসএস) মহাকাশচারীরা মূত্র রিসাইকেল করে পানের উপযোগী করে ব্যবহার করছেন। তবে তাদের মল স্পেস স্টেশন থেকে বাইরে ফেলে দেওয়া হয় এবং বায়ুমন্ডলে প্রবেশের পথে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। কিন্তু পেনসিলভেনিয়া ইউনিভার্সিটির নতুন গবেষণায়, মল ও মূত্র দুটিই খাদ্যে রূপান্তরের সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।
নতুন পদ্ধতি আবিষ্কারের জন্য গবেষকরা তাদের গবেষণাকর্মে মানব মল ও মূত্রের পরিবর্তে ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট টেস্টে তরল ও কঠিন বর্জ্য ব্যবহার করেন। এসব বর্জ্যকে তাঁরা ৪ ফুট লম্বা একটি সিলিন্ডারে আটকে রাখার পর সেখানে অক্সিজেন না থাকায় জীবাণুরা একে চূর্ণ-বিচুর্ণ করে দেয়। এতে ৫২ শতাংশ আমিষ ও ৩৬ শতাংশ চর্বি উৎপাতন হয়। আর এসব আমিষ ও চর্বি মানুষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব। এ ছাড়াও তারা আরো দুটি পুষ্টিকর জীবাণু উৎপাদন করতেও সক্ষম হন।